অবশ্যই ভালো লাগার অনুভূতি। আমার আবার একটু অস্বস্তিও লাগছে, ছোট থাকতে আমাকে তিনি অনেকবার দেখেছেন। শেখ কামাল ভাইয়ের সঙ্গে সাংস্কৃতিক নানা কর্মকাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত ছিলাম, এটা তিনি জানতেন। ইডেন কলেজে পড়ার কারণে সেখানেও দেখা হতো। আমাকে ডাকতেন, তাঁর কাছে যেতে বলতেন আরকি। আমাকে ডলি হিসেবেই জানতেন, তবে ডলি জহুর হওয়ার পর অবশ্য তাঁর কাছে যাওয়া হয়নি। আমি দূরে থাকতেই ভালোবাসি। ওনার চাচা টোকন আমার ক্লাসমেট। তাঁর সঙ্গে সব সময় কথা হয়। আপাকেও সব সময় দেখি, সব সময় আপার জন্য মন থেকে দোয়া করি।
আমি একটা কথাই বুঝি, এর আগে দুইবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছি। এবার নিয়ে তিনবার। আমার কাছে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারই মনে হচ্ছে। আজীবন সম্মাননা পেলে কী অনুভূতি হয়, কী করতে হয়, কিছুই মাথায় আসছে না। আমার খালি একটা বিষয় অবশ্য মনে হচ্ছে, হয়তো মরণোত্তর আজীবন সম্মাননা পেতে হলো না। জীবিত থাকা অবস্থায় পেলাম, এই খুশি বেশি কাজ করছে। আমি তো একজন অভিনয়শিল্পী, কোনো দিন আমার কাজকে অবহেলা করব না। আমার মনে হয়, কোনো শিল্পীই তাঁর কাজকে অবহেলা করেন না।
নতুন করে অন্য কিছু ভাবি না। আমি যেটা ভাবি, আমাদের নতুন ছেলেমেয়েরা যাঁরা আছেন, তাঁরা যেন সত্যিকারভাবে গুরুত্বসহকারে তাঁদের কাজটা করেন। মূল ধারার বাণিজ্যিক সিনেমা এখন কঠিন সময় পার করছে। এটা সবাই মিলে উত্তরণের চেষ্টা করতে হবে। কিন্তু মূল ধারার বাণিজ্যিক সিনেমার ক্ষেত্রে আমরা একটু বেশি অনুকরণপ্রিয়। অন্যকে দেখে ভালো করার চেষ্টা করছি। কিন্তু আমাদের নিজস্বতা দিয়ে ভালো করা গেলেই সফলতা পাব বেশি। এদিকে সবার নজর দেওয়া উচিত।
নিজের ব্যাপারটা যতটা না বুঝি, তার চেয়ে ইলিয়াস কাঞ্চনের অর্জনে আমি বেশি খুশি। সত্যিই ভীষণ খুশি। আমার খালি মনে হচ্ছে, আমি কি বেশি আগে পেয়ে গেলাম? ইলিয়াস কাঞ্চন অবশ্যই পাওয়ার উপযুক্ত। তবে আমাদের আরও কয়েকজন আছেন এই অর্জনের দাবিদার। একসঙ্গে অনেককে তো আজীবন সম্মাননা দেয় না। আমাদের আরও অসাধারণ অনেক শিল্পী আছেন, যাঁরা এটা পাওয়ার উপযুক্ত। তাঁদের দিকেও সরকার যেন নজর দেয়। এ রকম করে সবাই যেন আমরা পাই। আমার একা আনন্দিত হয়ে লাভ নেই। আমরা আনন্দ যদি ভাগ করতে না পারি সবার মধ্যে, সবাই যদি খুশি না হন, তাহলে আনন্দটা আমার মধ্যেই থেকে যাবে।